মরণোত্তর চক্ষুদান বিশ্বে বিপ্লব ঘটতে পারে বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ: বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম | অনলাইন সংস্করণ
তাজাখবর২৪.কম,ডেস্ক নিউজ: আমরা চাইলেই আমাদের স্বজনদের মৃত্যুর পর শোককে এক মহৎ সেবায় পরিণত করতে পারি। যেকোনো উত্তরাধিকার তার স্বজনের মৃত্যুর পর চোখ সংগ্রহের অনুমতি দিতে এগিয়ে আসলে দেশে কর্নিয়া দান ও কর্নিয়া সংযোজনে এক বিপ্লব ঘটে যেতে পারে।
তিনি বলেন, আমি আশা করি, সন্ধানী রক্তদানকে যেভাবে একটি সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করেছে, তেমনি মরণোত্তর চক্ষুদানকেও জনপ্রিয় করে তুলে বিশ্বে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করবে।
২ নভেম্বর বুধবার‘জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস ২০২২’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদ ও সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির উদ্যোগে প্রতিবছরের মতো এবারও ‘জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস ২০২২’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিরাপদ রক্তের গুরুত্ব উপলব্ধি করে ১৯৭২ সালে তৎকালীন পিজি হাসপাতাল, বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। দেশের অন্ধত্ব সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি ১৯৭৫ সালের ১৭ জুলাই ‘দ্য ব্লাইন্ড রিলিফ (ডোনেশন অব আই) অ্যাক্ট, ১৯৭৫’ প্রণয়ন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সন্ধানী মানবতার পথ ধরে হাসপাতালের মুমূর্ষু রোগীর জীবন ফিরিয়ে দিতে ১৯৭৮ সালের ২ নভেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রথম স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। ১৯৮৪ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার কর্নিয়া সংগ্রহ করেছে এবং প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে প্রায় চার হাজার জনকে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়েছে।
সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পরপরই আমরা স্বেচ্ছায় রক্তদান এবং মরণোত্তর চক্ষুদান দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে পালন করি। শুধু তাই নয়, আমরা ব্লাডব্যাংক ও চক্ষুব্যাংক স্থাপনের জন্য সন্ধানীকে নীলক্ষেতে একটি প্লট বরাদ্দ দেই। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে মানবদেহে সংযোজনের জন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও তার আইনানুগ ব্যবহার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ‘মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন, ১৯৯৯’ প্রণয়ন করি। সেই আইনে আমরা মানবদেহের কিডনি, হৃৎপিন্ড, ফুসফুস, অন্ত্র, যকৃত, অগ্নাশয়, অস্থি, অস্থিমজ্জা, চক্ষু, চর্ম ও টিস্যুসহ যেকোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন এবং মৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রে আইনানুগ কোনো উত্তরাধিকারের লিখিত অনুমতি সাপেক্ষে অঙ্গ নেওয়ার বিধান রেখেছিলাম।
‘যার ফলে স্বেচ্ছায় অঙ্গদানসহ মরণোত্তর চক্ষুদানে সব আইনি জটিলতার সমাধান হয়েছে। পরবর্তীসময়ে ২০১৮ সালের ১নং আইনের মাধ্যমে পূর্ববর্তী আইনটিকে যুগোপযোগী করে মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন (সংশোধন) আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করেছি। শুধু তাই নয়, সংশোধিত আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপিল এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউরের প্রয়োগের বিধান রেখেছি।’
শেখ হাসিন আরও বলেন, আমি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, সন্ধানী, সব জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং সর্বস্তরের জনগণকে এ মানবিক কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানাই। আমি ‘জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিস ২০২২’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করি।
তাজাখবর২৪.কম: ঢাকা বুধবার, ০২ নভেম্বর ২০২২ ১৭ কার্তিক ১৪২৯,০৬ রবিউসসানি ১৪৪৪