
সরকার সুমন কুমার দে,তাজাখবর২৪.কম,শেরপুর: শেরপুরে চাকুরি বিধি লংঘন করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১২ শিক্ষক সাংবাদিকতা করায় তাদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছেন জেলা শিক্ষা অফিসার। ২৩ অক্টোবর জেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা মো. রেজুয়ানের সাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে জানা যায়, জেলার বিভিন্ন সরকারী, আধা সরকারী কলেজ এবং মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সহকারী শিক্ষক ও প্রভাষক পদে কর্মরত অবস্থায় চাকুরি বিধি লংঘন করে দীর্ঘদীন থেকে সাংবাদিকতা করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে না।
তা আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে লিখিত ভাবে জানানোর জন্য বলা হয়েছে ওই শিক্ষকদের। নোটিশ পাওয়া শিক্ষকরা হলো, শেরপুর সদর উপজেলার ফসিউল দাখিল মাদরাসার শিক্ষক ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি ও দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার মো: মেরাজ উদ্দিন। আল জামিয়াতুল ইসলামীয়া ফাজিল মাদরাসার শিক্ষিকা ও সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাবিহা জামান শাপলা দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকায়। জেলার নকলা উপজেলার বানের্শ্বদী দাখিল মাদরাসার শিক্ষক মো. মোশারফ হোসেন দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকা। কলাপাড়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষক মো. হারুন অর রশিদ দৈনিক আজকের বসুন্ধরা পত্রিকায়। শাহরিয়ার দাখিল মাদরাসার শিক্ষক মোহাম্মদ হযরত আলী দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায়। ঝিনাইগাতি উপজেলার ভটপুর আলিম মাদরাসার শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম দ্যা নিউন্যাশন পত্রিকা। শেরপুর সদরের মডেল গালস্ ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক মাসুদ হাসান বাদল দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকা। নকলার চন্দ্রকোনা কলেজের প্রভাষক মহিউদ্দিন সোহেল এসএ টিভি দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকা। নকলার সরকারী হাজি জাল মাহমুদ কলেজের প্রভাষক ড. মোহাম্মদ আনিসুর রহমান আকন্দ দ্যা ডেইলি ইনডিপেন্ডেন্ট পত্রিকা। সরকারী হাজি জাল মাহমুদ কলেজের প্রভাশক আব্দুল মোত্তালিব সেলিম দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকা। শেরপুর সদরের নিজাম উদ্দিন কলেজের প্রভাষক যথাক্রমে রীতেশ কর্মকার দৈনিক পল্লীকন্ঠ প্রতিদিন পত্রিকায় এবং মো. মোক্তারুজ্জামান দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় কর্মরত আছেন। সূত্রমতে সম্প্রতি সাংবাদিক আদিল মাহমুদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের স্মারক নং-০৫.৪৫.৮৯০০.০০৬.৯৯.০০৩.২১.২২৮(১) তাং ১৫.০৯.২০২২ইং এর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২৩ অক্টোবর-২০২২ শেরপুর জেলা শিক্ষা অফিসার এ কারণ দর্শাও নোটিশ প্রদান করেন। ওই কারণ দর্শাও নোটিশে বলা হয়, বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২২ এর অনুচ্ছেদ ১১.১৭, বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদরাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত) এর অনুচ্ছেদ ১১.১০(ক) এবং বেসরকারী কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ এর অনুচ্ছেদ ১৫.১ মোতাবেক এমপিও ভুক্ত কোন শিক্ষক কর্মচারী একই সাথে একাধিক কোন পদে/চাকুরিতে বা আর্থিক লাভজনক কোন পদে নিয়োজিত থাকতে পারবে না। এদিকে উল্লেখিত শিক্ষকরা তথ্য গোপন করে সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত হওয়ায় সময় মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সময় না দিয়ে সাংবাদিকতায় সময় দিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যে এক শিক্ষক, ও সাংবাদিক নেতা মেরাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় পিবিআই চার্জশীট প্রদান করেছে।
এ বিষয়ে শেরপুর গালস্ মডেল ডিগ্রী কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও শেরপুরের পৌর মেয়র গোলাম কিবরিয়া লিটন জনায়, সরকারী প্রজ্ঞাপনে চাকুরির পাশাপাশি সাংবাদিকতায় যদি নিষেধাজ্ঞা থাকে তবে অভিযোগ পেলে সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মো. রেজুয়ান জানায়, আমারা আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে, জবাব পাওয়ার পর পরবর্তি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তাজাখবর২৪.কম: ঢাকা শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর ২০২২,১২ কার্তিক ১৪২৯,০১ রবিউসসানি ১৪৪৪