এ কিউ রাসেল,তাজাখবর২৪.কম,গোপালপুর: টাঙ্গাইলের সার্কিট হাউজে রোপণ করা তালিপাম গাছে ফুটেছে ‘মরণফুল’। গাছটি ২০১২ সালের ১৮ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপ-উপাচার্যের বাসা থেকে এনে টাঙ্গাইলের তৎকালীন জেলা প্রশাসক এম বজলুল করিম চৌধুরী রোপণ করেছিলেন। দীর্ঘ নয় বছর পর সেই তালিপাম গাছে ফুল ফুটেছে। সরেজমিন দেখা যায়, তালিপাম গাছটি দেখতে অনেকটা তাল গাছের মতো। ঝড় এলে গাছটি যেন হেলে না পড়ে তার জন্য পাকাপোক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গাছটির গোড়ার দিকে লোহার রড দিয়ে তৈরি খাঁচায় ঘিরে রাখা হয়েছে। তালিপাম গাছ একবার ফুল-ফল দিয়ে মারা যায়, তাই এর ফুলকে ‘মরণফুল’ বলা হয়ে থাকে। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের তথ্যানুযায়ী, পৃথিবীর কোথাও আর বুনো পরিবেশে তালিপাম গাছ দেখা যায় না। ঢাবি ক্যাম্পাসে থাকা শেষ তালিপাম গাছটিও ২০১০ সালে ফুল দিয়ে মরে গিয়েছিল। তবে সেই গাছের ফল থেকেই চারা তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। সূত্রমতে, ১৮১৯ সালে ভারতের পূর্বাঞ্চলে তালিপাম গাছের সন্ধান পেয়েছিলেন ব্রিটিশ উদ্ভিদবিজ্ঞানী উইলিয়াম রক্সবার্গ। পরে ঢাবির ফুলার রোডের পাশে ১৯৫০ সালে আরেকটি গাছ শনাক্ত করেন অধ্যাপক এম সালার খান। সে সময় পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমে আরও একটি গাছ ছিল। সেই গাছে ১৯৭৯ সালে ফুল আসে। শতবর্ষী সেই গাছে হঠাৎ ফুল দেখে স্থানীয়রা চমকে যায়। ‘ভূতের আছর’ ভেবে ফল ধরার আগেই গাছটি তারা কেটে ফেলেন। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার ১৯৯৮ সালে ঢাবির গাছটিকে বুনো পরিবেশে বিশ্বের একমাত্র তালিপাম গাছ হিসেবে ঘোষণা করে। ঢাবি প্রতিষ্ঠার আগে গাছটি লাগানো হয়েছিল। ২০০৮ সালে ওই গাছে ফোঁটে মরণফুল। জীবনচক্র মেনে ফুল থেকে ফল হয়। ২০১০ সালে গাছটি মারা যায়। টাঙ্গাইলের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর(এনডিসি) দীপ ভৌমিক জানান, গাছটি টাঙ্গাইলের সাবেক ডিসি এম বজলুল করিম চৌধুরীর সময় লাগানো হয়। তার জানামতে এ জাতের গাছে ৯৯ বছরের আগে ফুল ধরে না। কিন্তু এই গাছটিতে অনেক আগেই ফুল ধরেছে। রোপণ করার মাত্র নয় বছরেই গাছটিতে ফুল এসেছে- যা অত্যাশ্চার্য বটে। টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক (ডিসি) ডক্টর মো. আতাউল গণি জানান, তালিপাম গাছটিতে ২-৩দিন আগে ফুল ফুটেছে। ধারণা করা হচ্ছে, হাউব্রিড হওয়ার কারণে এতো আগে ফুল ফুটলো। গাছটি এক বার ফুল দেওয়ার পর আবার মারাও যাবে।
তাজাখবর২৪.কম: ঢাকা মঙ্গলবার, ১৭ আগস্ট ২০২১, ২ ভাদ্র ১৪২৮,০৭ মহররম ১৪৪৩