শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪

আলিয়া-ক্বাওমিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা ও দ্বন্ধ নিরসনে দুটি কথা
প্রকাশ: সোমবার, ১২ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০০ এএম | অনলাইন সংস্করণ
আলিয়া-ক্বাওমিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা ও দ্বন্ধ নিরসনে দুটি কথা,মোঃ ফখরুল ইসলাম আনছারী-ফাইল ফটো-

আলিয়া-ক্বাওমিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা ও দ্বন্ধ নিরসনে দুটি কথা,মোঃ ফখরুল ইসলাম আনছারী-ফাইল ফটো-

মোঃ ফখরুল ইসলাম আনছারী: উপস্থাপনা: কলকাতা আলিয়া ও ক্বাওমিয়া মাদ্রাসার ইতিহাস কোন এক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস নয়, এটি তদানীন্তন আরবি শিক্ষা তথা গোটা মুসলমান জাতির শিক্ষা-সংস্কৃতি, তাহযিব-তামাদ্দুন রক্ষার সংরাম বিবৃত এক বিরাট কাহিনী। উভয় মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন। যদিও কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা দারুল উলূম দেওবন্দ (ক্বাওমিয়া) মাদ্রাসার প্রায় ৮৫ বছর পূর্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ দুটি মাদ্রাসার যুগসূত্র বিশ্বনবী (স.) এর প্রতিষ্ঠিত ‘দারুল আরকাম’ মাদ্রাসার সাথে সম্পৃক্ত।
কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পটভূমি: ১৭৮০ সনের ১ অক্টোবর কলকাতা শহরের বৈঠক খানা রোডের ভাড়া করা একটি বাড়িতে কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। আলিয়া মাদ্রাসার ইতিহাস এক সোলানী ইতিহাস। তৎকালীন মুসলিম সমাজে ক্বুরআন হাদীসের শিক্ষা প্রায় বিলুপ্ত হওয়া থেকে উদ্ধার কল্পে প্রতিষ্ঠিত হয় আলিয়া মাদ্রাসা। এ মাদ্রাসা শিক্ষা তার সৃষ্টি থেকে অদ্য পর্যন্ত ক্বুরআন, আল-হাদীস, তাফসির, আরবি, আকাইদ, ফিক্হ ইত্যাদি ধর্মীয় শিক্ষার সাথে সাথে সাধারণ শিক্ষার সমন্বয়ে বাংলা, ইংরেজী, বিজ্ঞান, গণিত ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে সমান তালে। এ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার ইতিহাস সুদূরপ্রসারী। বিষয়টি স্পষ্ট করতে হলে একটু পেছনে যেতে হয়। দিল্লির স¤্রাট বাহাদুর শাহ্ ১৭৬৫ সালের ১২ আগস্ট বিশেষ এক পরিস্থিতিতে মুদ্রা, খুতবা ও শাসন পদ্ধতি একই অবস্থায় থাকার শর্তে ইংরেজদের হাতে শাসন ক্ষমতা ছেড়ে দেন। এরপর হতে ক্রমাগত মুসলমানদের শিক্ষা, সংস্কৃতি, তাহযিব-তামাদ্দুন সকল ক্ষেত্রেই দেখা দেয় স্থবিরতা। অসংখ্য মক্তব, মসজিদ, খানকা, মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয় ইংরেজ সরকার। অপর দিকে ইংরেজ শাসক পুরনো রীতিনীতি উপেক্ষা করে শাসন পরিচালনা করতে হিমশিম খাচ্ছিল। এমনি এক প্রান্তিলগ্নে সুযোগ বুঝে তৎকালীন মুসলমানগণ দল-মত-পথ নির্বিশেষে  সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলার ফোর্ট উইলিয়ামের গভর্ণর জেনারেল লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস এর নিকট একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করার জন্য লিখিত ভাবে জোরদাবি জানিয়ে বিশ্ব বিখ্যাত মুহাদ্দিস শাহ্ ওয়ালি উলাহ্ মুহাদ্দিসে দেহলভী রেঃ) এর সুযোগ্য ছাত্র মোল্লা মাজদুদ্দীন (রহঃ) কে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জোর অনুরোধ জানান। পরবতীর্তে লর্ড হেস্টিংস এর সহযোগিতায় স্থানীয় মুসলমানগন ১৭৮০ সালের ১ অক্টোবর কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে বিশিষ্ট বুজুর্গ প্রখ্যাত পন্ডিত মোল্লা মাজদুদ্দীন (রহঃ) কে শিক্ষক হিসেবে নিযোগ দান করেন। মোল্লা মাজদুদ্দীন (রাঃ) ইসলামী আইন ও বিচার ব্যবস্থাকে প্রাধান্য দিয়ে এ মাদ্রাসার সিলেবাস তৈরি করেন। এ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মুসলমানদের হারানো গৌরব ইসলামী শিক্ষা পূনরুজ্জীবিত হয়। উপরোক্ত আলোচনায় স্পষ্ট ভাবে প্রতিয়মান হয় যে, ১৭৮০ সালে কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভারত উপমহাদেশে আনুষ্ঠানিক ভাবে আলিয়া ধারার মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার সূচনা হয়। পর্যাক্রমে অভিবক্ত বাংলা, বিহার, আসাম ও ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে এ শিক্ষা সম্প্রসারিত হতে থাকে। কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা ১৯৪৭ সালে ঢাকায় স্থানান্তরিত হয়।
এ প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন খান বাহাদুর মাওলানা জিয়াউল হক। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় ও সহযোগীতায় আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী ও কর্মমূখী করার উদ্যোগ গৃহিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ মাদ্রসা শিক্ষা বোর্ড পূনঃগঠন করা হয়। এ ধারাবাহিকতায় বোর্ডের অনুমোদনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও অসংখ্য আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়ে অদ্য পর্যন্ত দ্বীনের খেদমত আঞ্জাম দিচ্ছে। এ গুলোর মধ্যে বিশ্ব বিখ্যাত ক্বারী ও আধ্যাত্মিক নেতা মরহুম মগফুর ক্বারী ইব্রাহীম ছাহেব (রঃ) এর বিশিষ্ট খলিফা চরমোনাইর প্রতিষ্ঠাতা বিখ্যাত ওলি সৈয়দ মোঃ এসহাক (রঃ) এর প্রতিষ্ঠিত চরমোনাই আহসানাবাদ রশিদিয়া কামিল মাদ্রাসা, ফুরফুরা শরীফের অন্যতম খলিফা বিশিষ্ট বুজুর্গ শর্শিনার মরহুম পীর হযরত মাওলা নেছার উদ্দিন (রহঃ) প্রতিষ্ঠিত শর্শিনা দারুসুন্নাত কামিল মাদ্রাসা, এশিয়া মহাদেশের আরেকজন বুজুর্গ হযরত মাওলানা কেরামত আলী জৌনপুরী (রহঃ) এর প্রতিষ্ঠিত রংপুর কেরামতিয়া আলিয়া মাদ্রাসা, নোয়াখালীর কেরামতিয়া আলিয়া মাদ্রাসাসহ দেশের অসংখ্য পীর মাশায়েখদের প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসা সমূহ অন্যতম। অতিব দুঃখের বিষয় কতিপয় দ্বীনি ভাই না বুঝে অথবা বুঝেও উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে আলিয়া মাদ্রাসার ব্যাপারে নানা অপব্যাখ্যা দিয়ে সাধারণ জনগনের মধ্যে বিভ্রান্ত ছাড়ানো যা সম্পূর্নরূপে অনুচিত।
দারুল উলূম দেওবন্দ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠার পটভূমি: ১৯৬৬ সনের ৩১ মে বৃহস্পতিবার ভারতে দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ক্বওমিয়া মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার সূচনা হয়। কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার ইতিহাস যেমন মুসলমান জাতির এক ক্রান্তিলগ্নের ইতিহাস তেমনি দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার ইতিহাসও তৎকালীন মুসলিম মিল্লাতের একই ইতিহাস। ১৭৮০ সালের কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সাময়িক মুসলমানদের হারানো গোরব ইসলামী শিক্ষা পুনরুজ্জীবিত হলেও ইংরেজরা ইসলাম ও মুসলমানদেরকে ধ্বংস করতে বসে থাকেনি। ১৮৫৭ সালে আজাদি আন্দোলনে মুসলমানরা নেতৃত্ব দেয়ার কারণে মুসলমানগন বিশেষ করে তৎকালীন ওলামায়েকেরামগণ ইংরেজদের প্রধান দুশমন ও তাদের পৈচাশিক নির্যাতনের শিকার হয়। তারা অন্যায়ভাবে মুসলমানদের উপর অত্যাচারের ষ্টিম রোলার চালাতে থাকে। তারা মুসলমানদের ঐতিহ্যবাহী স্মৃতি সমূহ-মসজিদ, মাদ্রাসা, ওয়াকফ সম্পত্তি, তাহযিব, তামাদ্দুন, ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞান ইত্যাদি নিশ্চিহ্ন করে ফেলার জন্য অসংখ্য অপচেষ্টা চালায়। এ সময় মুলমানদের ছিল খুবই দুরবস্থা। এমনি এক বিশেষ পরিস্থিতিতে ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহারামপুর জেলার দেওবন্দ নামক স্থানে ১৮৬৬ সালে ৩১ মে চাত্তা মসজিদের বারান্দায় একটি আনার গাছের তলে হযরত মাওলানা কাশেম নানুতুবি (র.); মোহাম্মদ ইয়াকুব (র.); রফিউদ্দিন ওসমানি (র.); জুলফিকার আলী দেওবন্দী (র.); ফজলুর রহমান ওসমানী (র.); ও হাজী আবেদ হোসেন (র.) মিলে দারুল উলূম বেওবন্দ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ক্বাওমিয়া মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত রচিত হয়। এ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেও মুসলমানদের হারানো গৌরব ফিরে আসে। এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে প্রথমে-
প্রতিষ্ঠিত হয়। কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা তথা আলিয়া শিক্ষা ব্যবস্থা ও দারুল উলূম দেওবন্দ মাদ্রাসা তথা ক্বাওমিয়া মাদ্রাসা উভয়ের অবস্থান থেকে দ্বীনি খেদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছে। একটিকে অপরটির তুলনায় খাটো করার কোন বিবেকবানের জন্য উচিত নয়। তাই উভয়ই শিক্ষা ব্যবস্থাকে স্বাগত জানিয়ে মুসলিম উম্মাহের মধ্যে ঐক্য গঠন করা জরুরী।
দ্বন্ধ নিরসন :
১। কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার শিক্ষক মোল্লা মাজদুদ্দীন (র.) এর মূলে শাহ্ ওয়ালি উল্লাহ মোহাদ্দিসে দেহলভী (র.)। অপর দিকে দারুল উলূম দেওবন্দ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক মোল্লা মাহমুদ (র.) (যিনি পরবর্তীতে শায়খুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান দেওবন্দি নামে পরিচিত) এর যোগসূত্রও শাহ্ ওয়ালি উল্লাহ মোহাদ্দিসে দেহলভী (র.) পর্যন্ত।
২। জৈনপুরি সিলসিলার মূল হচ্ছেন হাদিয়ে বাংলা মাওলানা কেরামত আলী জৈনপুরি (র.) যিনি আলিয়া ও ক্বাওমিয়া হক পন্থি তাঁর মূল শাহ্ ওয়ালি উল্লাহ মোহাদ্দিসে দেহলভী (র.) পর্যন্ত।
৩। ফুরফুরা শরীফেল মূল হাদীয়ে বাঙ্গাল ও আসাম মাওলানা আবু বকর সিদ্দিকি (র.) (যিনি আলিয়া ও ক্বাওমিয়া হক পন্থি) এর যোগসূত্র শাহ্ ওয়ালি উল্লাহ মোহাদ্দিসে দেহলভী (র.) পর্যন্ত।
৪। চরমোনাইর মূল হাদীয়ে বাংলা সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক সাহেব (র.) (যিনি আলিয়া ও ক্বাওমিয়া হক পন্থি) এর পর্যাক্রম যোগসূত্র শাহ্ ওয়ালি উল্লাহ মোহাদ্দিসে দেহলভী (র.) পর্যন্ত।
৫। বাহাদুর পুুরের মূল হাজি শরীয়ত উল্লাহ (র.) (যিনি আলিয়া ও ক্বাওমিয়া হক পন্থি) তার যোগসূত্রও শাহ্ ওয়ালি উল্লাহ মোহাদ্দিসে দেহলভী (র.) পর্যন্ত।
৬। শর্শিনার মূল হাদিয়ে জামান হযরত মাওলানা নেছার আহম্মদ সাহেব (র.) এর মূলও হচ্ছে শাহ্ ওয়ালি উল্লাহ মোহাদ্দিসে দেহলভী (র.) পর্যন্ত।
বিখ্যাত মুহাদ্দিস শাহ্ ওয়ালি উল্লাহ মোহাদ্দিসে দেহলভী (র.) এর যোগসূত্র বিশ্বনবী (স.) পর্যন্ত। সুতরাং আলিয়া আর ক্বাওমিয়ার মধ্যে দ্বন্ধ রইল কোথায় ?
৭। ভারতীয় উপমহাদেশে সর্বশ্রেষ্ঠ ফকিহ মুফতি আমিমুল ইহেসান (রহঃ) কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে উচ্চতর ডির্গ্রি অর্জন করে সেখানেই দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেন। পরবর্তীতে ঢাকায় আলিয়া স্থানান্তরিত হলে তিনি এখানে চলে আসে এবং এখানথেকেই অধ্যাপনার মাধ্যমেই কর্মজীবন শেষ করে। তিনি হাদিস ও তাফসীর শাস্ত্রে ব্যাপক অবদান রাখেন। মিজানুল আকবার, আল আরবাইন, ফি-সালাত, আল-ফিকহুস সুনান ওয়াল আসারসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিতাব রচনা করে খ্যাতি অর্জন করেছেন। 

দারুল উলূম দেওবন্দ মাদ্রাসায় পড়–য়া শিক্ষিতদের আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা ঃ এক সময় আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ফাজিল পাস করলে যে মূল্যায়ন পেত দারুল উলূম দেওবন্দ থেকে ফাজিল পাস করলেও একই মূল্যায়ন পেত। ফলে অসংখ্য আলিয়া মাদ্রাসার সুপার, অধ্যক্ষ মুহাদ্দিস ছিলেন ক্বাওমি  (দেওবন্দি) শিক্ষায় শিক্ষিত। পরবর্তীতে তাদের এ স্বীকৃতি প্রত্যাহার করা হলেও বর্তমানে শিক্ষা বান্ধব সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রি শেখ হাসিনার বদাণ্যতায় তারা আবারও তাদের স্বীকৃতি পেয়েছে। আমার জীবনের দাখিল পর্যায়ের প্রথম ওস্তাদ আমার শিরোমনি হযরত মাওলানা মোহাম্মদ আবদুর রশিদ সাহেব (র.) ছিলেন ফারেগে ফাজেলে দেওবন্দ। (তিনি ছিলেন মাদ্রাসার প্রধান) মহান আল্লাহ তাঁর কবরকে জান্নাতের টুকরায় পরিণত করুক। আমিন।

আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রিক ওয়াজ-নসিহত ঃ ক্বাওমিয়া ওলামায়ে কেরামদের মধ্যে চট্টগ্রামের খতিবে আজম হযরত মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান (র.) নোয়াখালীর খতিবে আজম হযরত মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিসবাহ (র.) কুমিল্লার হযরত মাওলানা মোস্তফা আল-হুসাইনি (র.) (যিনি দীর্ঘদিন নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস ছিলেন) সহ অসংখ্য ক্বাওমিয়া হযরতগণ সারা দেশের অগনিত আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রিক ওয়াজ-নসিহতের মাধ্যমে এদেশে হেদায়েতের কাজ আনঞ্জাম দিয়েছন। তাঁরা কখনও আলিয়া আর ক্বাওমিয়া বলে পার্থক্য সৃষ্টি করে সমাজে বিশৃঙ্খলা করেননি। অথচ বর্তমানে কতিপয় ভাইয়েরা না বুঝে, অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে উদ্দেশ্য প্রনোদিত আলিয়া-ক্বাওমিয়ার মধ্যে প্রবেধ সৃষ্টি করে বিশৃঙ্খলা ঘটাচ্ছে যা আদো কাম্য নয়।
পরিশেষে বলতে চাই যে ভাবে ইতিহাসের এক বিরাট প্রেক্ষাপটে আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা হয়েছে অনুরূপভাবে অপর বিশেষ প্রেক্ষাপটে ক্বওমিয়া মাদ্রাসাও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উভয় মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার লক্ষ-উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন। ব্যবধান শুধু আলিয়া মাদ্রাসা পরিচালিত হচ্ছে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় আর ক্বওমিয়া মাদ্রাসা পরিচালিত হচ্ছে জনগণের পৃষ্ঠপোষকতায়। বর্তমানে আলিয়া মাদ্রাসার ন্যায় ক্বাওমিয়া মাদ্রাসাতেও ধর্মীয় বিষয়ের পাশাপাশি সাধারণ বিষয়ও পাঠদান হচ্ছে। ক্বাওমিয় মাদ্রাসাগুলোও পর্যায়ক্রমে ভবিষৎতে সরকারের নিয়ন্তণে চলে যেতে পারে; এটি কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র। আমার এ লেখনির মাধ্যমে আলিয়া-ক্বাওমিয়া মাদ্রাসার ব্যাপারে কোন ভুল থাকার কথা নয়। এ ক্ষুদ্র লেখায় অভিজ্ঞ কারো দৃষ্টিতে ভূল ধরা পড়লে জানালে খুশি হব এবং নিজকে সংশোধন করে নিতে চেষ্টা করব- ইনশাআল্লাহ।

তথ্যসূত্র :
১। আলিয়া মাদ্রাসার ইতিহাস, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা।
২। হিসনুল ঈমান ওয়াল মুসলিমিন, মাওলানা মুহাম্মদ হারুন শায়খুল হাদীস (সাবেক), জামিল মাদ্রাসা, বগুরা।
৩। ওয়েব সাইট www.darululoomdeoband.com
৪| www.madrasah-e allia.com

লেখক- মাদ্রাসা সুপার, শেখ ফজিলাতুন্নেসা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা, ০১৭৮৭২৭০৩৯৮

তাজাখবর২৪.কম: ঢাকা সোমবার, ১২ অক্টোবর ২০২০, ২৭ আশ্বিন ১৪২৭ ,২৪ সফর ১৪৪২

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

সম্পাদক: কায়সার হাসান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আর কে ফারুকী নজরুল, সহকারি সম্পাদক: জহির হাসান,নগর সম্পাদক: তাজুল ইসলাম।
ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: মডার্ণ ম্যানশন (১৫ তলা) ৫৩ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০।
ফোন: ০৮৮-০২-৫৭১৬০৭২০, মোবাইল: ০১৮১৮১২০৯০৮, ই-মেইল: [email protected], [email protected]
সম্পাদক: কায়সার হাসান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আর কে ফারুকী নজরুল, সহকারি সম্পাদক: জহির হাসান,নগর সম্পাদক: তাজুল ইসলাম।
ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: মডার্ণ ম্যানশন (১৫ তলা) ৫৩ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০।
🔝