শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ঘুরে এলাম পর্যটন অঞ্চল মধ্যপ্রদেশ
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০০ এএম | অনলাইন সংস্করণ
ঘুরে এলাম পর্যটন অঞ্চল মধ্যপ্রদেশ,এমজি বাবর

ঘুরে এলাম পর্যটন অঞ্চল মধ্যপ্রদেশ,এমজি বাবর

এমজি বাবর,তাজাখবর২৪.কম: আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারত ২৮টি প্রদেশ নিয়ে এই দেশটি ১৯৪৭ সালে ১৫ আগষ্ট স্বাধীনতা লাভ করে। এই ভারতবর্ষে প্রায় ১ কুটি ৪০ লক্ষ জনগুষ্টি অধ্যশিত মানুষ ৩৩ বাষায় কথা বলে। এর মধ্যে জাতীয় ভাষা হিন্দী, ২য় তম বাষা উর্ধো এবং ইংরেজী ।
প্রতিটি প্রদেশের মানুষ গুলির ছাল চরণ আচার আছরন ভিন্নতা দেখা যায়। কলকাতা হাড়ওয়া রেলওয়ে জংশন থেকে যে কোন দ্রুতগামি ট্রেনে যেতে হলে প্রায় ৯ শত কিলোমিটার পাড়ি দিলে মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভূপালে পৌচতে পারবেন। শহরটি দেখতে বেশ চমৎকার এখানে অনেক ঐতিহ্যাসিক পর্যটন শিল্প রয়েছে।
মধ্যপ্রদেশ নামটি থেকেই অনুমান করা যাচ্ছে রাজ্যটি ভারতের মধ্যর্তী অঞ্চলে অবস্থিত। এটি ভারতের বৃহত্তম রাজ্য। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে সমসাময়িক কালের মধ্যে ভারত ভোপাল, বিন্ধ্যপ্রদেশ ও প্রাচীন মধ্যেপ্রদেশ গঠিত হয়। এর উত্তরে উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থান, দক্ষিণে অন্ধ্রপ্রদেশ, পূর্বে উড়িশা ও বিহার আর পশ্চিমে মহারাষ্ট। জেলার সংখ্যা ৪৩টি। আয়তন প্রায় ৪৪৩৪৫০ বর্গ কি: মি: । রাজধানী ভোপাল।
মধ্যেপ্রদেশের এক দিকে সদম্ভে মাথা উচিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে সাতপুরা পর্বতশ্রেণী  বিন্ধ্য পর্বত। বিস্তীর্ণ অষ্ণল জুড়ে রয়েছে পার্বত্য বনাঞ্চল আর রজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত দিয়ে বয়ে চলেছে চম্বল,শিপ্রা আর বিতোয়া নদী। সব মিলিয়ে রাজ্যের এক বড় বগ্নাংশ জুড়ে এমন এক প্রকৃতিক পরিবেশ গড়ে উঠেছে যা বাস্তবিকই মনলোভা। সুপ্রাচীনকালে এটি অবন্তীনগরের উল্লেখ পাওয়া যায়। সম্রাট অশোক, হূন রাজারা, শূঙ্গ রাজারা,সম্রাট হর্যবর্ধন এ অঞ্চলটিকে শাসন করে গেছেন। সুদূর অতিতে রাজা ভুজও এর শাসনকর্তা নিযুক্ত হয়েছিলেন। তাঁর নামানুসারেই ভূপাল বা ভোপল নামটির উৎপত্তি হয়। মধ্যপ্রদেশে আদিম ও আর্য জাতির বাস। ভগবান যীশু খ্রিস্টের জন্মের প্রায় এক লক্ষ বছর আগে এখানে আদিম জাতির একাধিপত্য ছিল। পার্বত্যাষ্ণলে আজও তাদের দেখা মেলে।
মধ্যেপ্রদেশের প্রধান ভাষা হিন্দী। বর্তমানে ইংরেজী ভাষাভাষীর সংখ্যাও কম নয়। গ্রীষ্মে পার্শ্ববর্তী
রাজ্যগুলির মধ্যে রাজস্থান ছাড়া এখানে গরম খুব বেশী অনুভূত হয়। ভোপাল মধ্য প্রদেশের রাজধানী। গ্রীষ্মে সর্বাধিক উষ্ণতা ৪২ সেঃ, শীতে সর্বনিম্ন উষ্ণতা ১০ সেঃ। বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৪৩০ মিমি। ভ্রমণের উপযুক্ত সময় জলাই ফেব্রুয়ারি। শীতে পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র চাই।
ভ্রমণ সূচী:
মধ্যেপ্রদেশ ভ্রমণ দুটো আগে বিভক্ত করে নিয়ে সালে অর্থ, সময় ও পরিশ্রম লাঘব হতে পারে। (ক) অমরকন্টক, কানহা জাতীয় উদ্যান, পাঁমাড়ি, সাঁচী,ভীমবেটকা,জব্বলপুর, বান্ধবগড়। (খ) ঝাঁসী, খাজুরাহো, ওরছা, উজ্জয়িনী, ইন্দোর মান্ড ও ভোপাল।
কোথায় কী কী দেখবেন:
সাঁচী বৌদ্ধ স্মৃতি বিজড়িত প্রসিদ্ধ স্থান। সম্রাট অশোকের অমূল্য কীর্তিও এখানে লক্ষিত হয়। এক কথায় সাঁচী পর্যটন করার অর্থই হচ্ছে প্রচীন ইতিহাসের সঙ্গে সম্যক পরিচিত হওয়া।
সাঁচীতেই দেখা যাবে ভারত বিখ্যাত বৌদ্ধস্তূপ। এর নির্মাতা বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক ও পৃষ্ঠপোষক সম্রাট অশোক। কলিঙ্গ যুদ্ধের ভয়াবহতা চাক্ষুষ করার পর তিনি যেসব বৌদ্ধমঠ ও স্তূপ প্রভুতি নির্মাণ করান তাদের মধ্যে খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে নির্মিত শ্রেষ্টতম সাঁচীস্তূপ। এর পর তিনি প্রভূত অর্থ ব্যয় করে ভারতের ভিবিন্ন প্রান্তে ভিবিন্ন উচ্ছতা বিশিষ্ট যে ২৬ হাজারের কাছাকাছি স্তূপ নির্মাণ করান তাদের আটটি স্তূপই সাঁচীতে অবস্থিত। প্রথম স্তূপটি ভারত বিখ্যাত স্তূপ এর উচ্ছতা প্রায় ১৬ মিটার। এটি নির্মাণকার্য শুরু করেছিলেন সম্রাট অশোক। তিনি কাজ শেষ করে যেতে পারেন নি। খ্রিস্টপূর্ব ২ শতকের তাঁর বংশধরার এটি সমাপ্ত করেন। স্তূপটির চতুর্দিক ঘিরে রেখেছে প্রাচীর । এর গায়ে প্রাচীর ভারতের স্থাপত্য ও ভাস্কর্যের অমুল্য নিদর্শন লক্ষিত হয়। ভগবান গৌতম বুদ্ধের জন্ম, দিব্যজ্ঞান লাভ এবং ধর্ম প্রদেশের প্রতীকরূপে স্থান পেয়েছে পদ্ম,পিপুলগাছ আর চক্রের মাধ্যমে। আর তাঁর নির্বানলাভকে তুলে ধরা হয়েছে পদচিহ্নের মাধ্যম।
মধ্যপ্রদেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলোর মধ্যে মান্ডর আকর্ষণ পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে বেশী বললেও হয়ত বা বাড়িয়ে বলা হবে না। ভাস্কর্য ও চিত্রশিল্পীদের কাছে এ জায়গাটি তো স্বর্গতূল্য। সুদুর অতীতে বিন্ধ্য পর্বতের গায়ে, সমতলভূমি থেকে ২০৫০ ফুট উঁচিতে মান্ড শহরটি তিলে তিলে গড়ে উঠেছিল। শুধুমাত্র শহর না বলে বরং একে দুর্গকেন্দ্রিক শহর বলাই সঙ্গত। এর তৎকালীন আয়তন ছিল ১৮ বর্গ কি: মি:। সম্প্রতি শহরের আয়তন কিছুটা সম্প্রচারিত হয়েছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে পুরো শহরটি একটি দুর্গ ছাড়া অন্য কিছুু ভাবতেই উৎসাহ পাওয়া যায় না। ৪৮ কি: মি: প্রাচীর বেষ্টিত মান্ড শহরটিকে বেষ্টন করে রেখেছে। শহরে প্রবেশের জন্য বারোটি তোরণ রয়েছে। তোরণ গুলির মধ্যে দিল্লি দরওয়াজা প্রধান তোরণ হিসেবে গণ্য হয়।
এখান দিয়ে প্রবেশ করতে কয়েকটি ছোট ছোট তোরণ ডিঙিয়ে (ভঙ্গি দরওয়াজা, আলমগীর দরওয়াজা প্রভৃতি) তবে মূল শহরে প্রবেশ করতে হয়। বারোটি তোরণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য-জাহাঙ্গীর দরওয়াজা, তারাপুর দরওয়াজা, রামপাল দরওয়াজা প্রভৃতি।
এ ছাড়াও রয়েছে ইন্দোলা মহল। এটি দেখতে অনেকটা দোলনার মত বলে এরকম নাম দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে দিককার দেওয়ালগুলো এমন ঢালু করে তৈরী করা হয়েছে যাতে হঠাৎ করে দেখলে অতিকার একটি দোলনা বলে ভ্রম হওয়াই স্বাভাবিক।
এর ঘটির আয়তন দৈর্ঘ ৮৭ ফুট, প্রস্ত ৬০ ফুট। আর উচ্ছতা ৩৫ ফুট। সম্পূর্ণ মহলটিকে ইংরেজি () আকৃতি বিশিষ্ট করে নির্মাণ করা হয়েছে। মহলটি এক সময় মালওয়ার সুলতানরা দরবারকক্ষ হিসেবে ব্যবহার করতেন। জানালায় অতি সূ² কারুকার্য সম্বলিত জাফরি ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলে মহলটির সৌন্দর্য অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।

তাজাখবর২৪.কম: ঢাকা বৃহস্পতিবার,৮ অক্টোবর ২০২০, ২৩ আশ্বিন ১৪২৭, ২০ সফর ১৪৪২

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

সম্পাদক: কায়সার হাসান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আর কে ফারুকী নজরুল, সহকারি সম্পাদক: জহির হাসান,নগর সম্পাদক: তাজুল ইসলাম।
ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: মডার্ণ ম্যানশন (১৫ তলা) ৫৩ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০।
ফোন: ০৮৮-০২-৫৭১৬০৭২০, মোবাইল: ০১৮১৮১২০৯০৮, ই-মেইল: [email protected], [email protected]
সম্পাদক: কায়সার হাসান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আর কে ফারুকী নজরুল, সহকারি সম্পাদক: জহির হাসান,নগর সম্পাদক: তাজুল ইসলাম।
ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: মডার্ণ ম্যানশন (১৫ তলা) ৫৩ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০।
🔝